ইসলামী সমাজের আমীর হজরত সৈয়দ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যেই
সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ মানব জাতির সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সমগ্র জীবন গঠন এবং পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন-বিধান সম্বলিত কল্যাণকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’ প্রদান করেছেন।
তিনি বলেন, দুনিয়ায় কল্যাণ শান্তি এবং আখিরাতে জান্নাত লাভের একমাত্র পথ ‘ইসলাম’ এর বিপরীত মানুষের রচিত সকল ব্যবস্থাই জাহান্নামের পথ। ইসলাম ও মানব রচিত ব্যবস্থার
মূল পার্থক্য হচ্ছে- ইসলামে সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর; মানুষেরনয়। অপরদিকে গণতন্ত্র ও রাজতন্ত্রসহ সকল মানব রচিত ব্যবস্থায় সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায়
সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের। কাজেই মানব রচিত ব্যবস্থা গ্রহন করলে কিংবামেনে নিলে ইসলামের বিরুদ্ধেই অবস্থান গ্রহন করা হয়। তাই তিনি সকলকে মানব রচিত ব্যবস্থা পরিত্যাগ করে গণতন্ত্র ও রাজতন্ত্রসহ মানব রচিত সকল ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করে সমাজ ও
রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় মহাসত্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামের পরিবর্তে মানব রচিত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত থাকায় দেশ ও জাতির মানুষ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিভিন্ন রকম আযাব-গজবের শিকার হয়ে বহুবিধ সমস্যায় জড়িয়ে দূর্ভোগ ও অশান্তিতে কাল কাটাচ্ছে একথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থ সম্পদের মোহ, ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তার
নিয়ে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও সংঘর্ষ মূলতঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনেরই আযাব-গজব । তিনি আরো বলেন,সকল ধর্মের অনুসারীদের জন্য যার যার ধর্ম পালনের সুযোগ রেখে আল্লাহর রাসূল হযরত
মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে আল্লাহরই সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে তাঁরই আইন-
বিধানের প্রতিনিধিত্বকারী আমীরের নেতৃত্বে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামের আইন-বিধান
প্রতিষ্ঠিত হলেই আল্লাহর বিশেষ রহমতে মানুষের জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এবং যারা আল্লাহর
রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর অনুসরণ ও অনুকরণে ইসলামের আইন-বিধান মেনে জীবন গঠন ও পরিচালনা করবে তারা আখিরাতের জীবনেও জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়ে চির সুখের স্থানজান্নাত লাভ করবে।
আজ ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ইং রবিবার বিকাল ৪ ঘটিকায় (বাদ আসর) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এর উত্তর পাশের গেইটে “সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণে সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’প্রতিষ্ঠায় মহাসত্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত “বিশেষ দাওয়াতী সমাবেশ”এ ইসলামী সমাজের আমীর বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব-গজব থেকে রক্ষা পেয়ে তাঁর রহমত লাভ করতে হলে আল্লাহর নির্দেশিত ও তাঁরই রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে নিজের সময় ও অর্থ কুরবানি করে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামের আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার আন্তরিক প্রচেষ্টা
চালিয়ে যেতে থাকতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের অধিনে নির্বাচন কিংবা সমাজ ও রাষ্ট্রে মানব রচিত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত থাকাকালীন সময়ে সশস্ত্র লড়াই ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নয় ।ঈমান ও ইসলামের দাওয়াতের মাধ্যমে দাওয়াত কবুলকারীদেরকে নিয়ে মানব রচিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে“মানুষের নয়! সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর”- এই মহাসত্যের ভিত্তিতে আমীরের নেতৃত্বের আনুগত্যে ঈমানদারগণের সমাজ গঠন আন্দোলনই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে একদল ঈমানদার ও সৎকর্মশীল লোক গঠন হলেই আল্লাহর রাব্বুল আলামীন তাদেরকে খিলাফত (রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা) দান করবেন আর তখনি তারা রাসূল (সাঃ) এর অনুরসণ ও অনুকরণে মানুষের জীবনে ইসলামের আইন-বিধান চালু করবেন। ফলে মানুষের জীবনে সু-শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। এ পদ্ধতিতেই “ইসলামী সমাজ” এর সদস্য ও সদস্যাগণ সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ,শান্তি এবং আখিরাতের জীবনে চির সুখের স্থান জান্নাত লাভের নিমিত্তে দল-মত নির্বিশেষেসকলকে তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ইসলামী সমাজে শামিল হয়ে ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব পালনেরআহবান জানান।“ইসলামী সমাজ” চট্টগ্রাম বিভাগীয় অঞ্চল-১ এর দায়িত্বশীল জনাব আজমুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে
আরো বক্তব্য রাখেন “ইসলামী সমাজ” ঢাকা বিভাগীয় অঞ্চল-২ এর দায়িত্বশীল জনাব মুহাম্মাদ ইয়াছিন।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী সমাজের অন্যান্য বিভাগীয় দায়িত্বশীল- মুহাম্মাদ ইউসুফআলী মোল্লা, সোলায়মান কবীর, আমীর হোসাইন, মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, নুরুদ্দিন আহমেদ, আবুবকর সিদ্দিক, আসাদুজ্জামান, সেলিম মোল্লা, হাফিজুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।